একজন বড় ছেলের জীবনের বাস্তব কাহিনী
দেশে ২৫ বছর চাকরি করে মানুষ অবসরে যায় পেনশন পায় বাকি সময় টুকু পরিবার আত্নীয় স্বজনের সাথে কাটায় কিন্তু একজন প্রবাসী ২৭ বছর বিদেশ করার পর কোন হিসাব মিলছেনা জীবনের তাগিদে তাকে আবার প্রবাসে ছুটতে হয় এমন এক প্রবাসীর জীবনের গল্প নিয়ে এসেছে রহিম।
"এক জন বড় ছেলের বাস্তব কাহিনী"
আব্দুর রহিম
আব্দুর রহিম
বাবা মায়ের ঘরে প্রথম সন্তান হয়ে আসল ছেলেটি। এর আগে তাদের ঘরে কোনো সন্তান আসেনি, সেই হিসাবে সবার কাছে সেই অনেক বেশি আদরের ছিল। আস্তে আস্তে সেই বড় হতে লাগল, আর বাবা মা ও অনেক খুশি এর পর তাকে স্কুলে ভর্তি করাল। সেই ও পড়ালেখা করতে লাগল। এভাবে অনেক গুলো বছর কেটে গেল। একদিন তার বাবা মা অন্য ভাই গুলোর থেকে আলাদা হয়ে গেল। এরই মধ্যে তাদের ঘরে একটা বোন আসল। পরিবারটা অনেক বড় হয়ে গেল। ছেলেটা এতদিনে ক্লাস নাইনে উঠল। একদিন তার বাবা বলতে লাগল সেই একা আর পরিবার সামলাতে পারতেছেনা ছেলেটা এই কথা শোনে বুঝতে পারল তার বাবা কি বলতে চাই। পর দিন থেকে ছেলেটা তার বাবার সাথে কাজে চলে যায় তার আর স্কুলে যাওয়া হচ্ছে না। এভাবে কেটে গেল অনেক গুলো বছর। তখন একদিন তার বাবা বলল বিদেশে যাওয়ার কথা ছেলেটির বয়স তখন সতের বছর। ছেলেটি ও না করেনি কারন সেই জানে কোনো না কোনো কাজ করে পরিবারের হাল ধরতে হবে তাকে। এর পর সেই বিদেশে চলে গেল, আর সেখানে গিয়ে সেই বুঝতে পারল হয়ত জীবনের সব কিছু হারিয়ে পেলেছে। প্রবাসের প্রতিটা দিন তাকে কষ্টের মধ্যে কাটাতে হইছে, এর মধ্যে তাদের পরিবারে আরো তিন ভাই জন্ম নিল। তার চিন্তা আরো বেড়ে গেল, একদিকে নিজে কষ্টে অন্যদিকে মা বাবা ভাই বোনের কষ্ট যেন পুরা দুনিয়া তার মাতার উপর পড়ল। এর মধ্যে সেই দিন রাত কাজ করে পরিবারের জন্য এক তারিখ টাকা পাঠিয়ে দেয়। কষ্ট হলে ও তার পরিবারেরর সবার মুখে হাসি পোটাতে পেরেছে এটাই তার কাছে বড় পাওয়া। এক দিন সেই একটু বেশি আয় রোজগার করার জন্য রাতে কাজে যায়, কাজ করতে করতে এক সময় তাকে পুলিশ ধরে পেলে কারন তার ভিসা শেষ হয়ে গেল। তিন মাস জেলে কেটে যখন বাড়িতে আসল তখন তার হাতে একটাকা ও ছিল না। অনেক কষ্টে প্রায় ছয় মাস থাকল, এর পর সেই অন্য একটি দেশে চলে গেল, সেখানে এসে দেখে তার মালিক ঠিক নাই। তখন ছয় মাস অনেক কষ্ট করে টাকা জমিয়ে অন্য একটা মালিকের কাছে ভিসা লাগাল। এর পর থেকে সারা দিন কষ্ট করে রোজগার করা টাকা দিয়ে পরিবারে ভরণ পোষন ভাই বোন দের লেখা পড়া সব কিছু চালিয়ে যান। এভাবে কেটে গেল তার ২৭ টা বছর তার জীবনে ছিল না কোনো আনন্দ কোনো চাওয়া পাওয়া শুধু ছেয়েছিল পরিবারটাকে সাজাতে ভাই বোনদেরকে মানুষের মত মানুষ করতে। এভাবে জীবনের সাথে যুদ্ধ করছে হাজার ও পরিবারের বড় ছেলেরা, কিন্তুু এর বিনিময় আমরা তাদের কি কিছু দিতে পেরেছি!
আমি স্যালুট জানায় হাজারও পরিবারের বড় ছেলেদের ।
No comments