মা মরা মেয়ে রিতু। দেখতে যেন বেহেশতের পরী। সাত বছর বয়স মাত্র।
রিতুর স্বপ্ন............
হুমায়রা ইয়াসমিন।
মা মরা মেয়ে রিতু। দেখতে যেন বেহেশতের পরী। সাত বছর বয়স মাত্র। রিতু থাকে তার দাদীর সাথে। বাবা তো মেয়ের খেয়ালই রাখেনা। মা মারা গেছেন মাত্র তিন বছর হল। মা বেঁচে থাকতে খুবই অাদর ও ভালবাসতেন। কিন্তু একদিন রোড এক্সিডেন্টে মা মারা যান। মা মারা যাওয়ার ৬ মাস পর বাবা চাকরীর জন্যে শহরে চলে যান। সেখানে এক বড় লোকের মেয়েকে বিয়ে করে সেখানে থেকে যান। পরে নিজের মা ও রিতুর খবরই নেননি। রিতু ও তার দাদী বন থেকে কাঠ সংগ্রহ করে এবং কাঠগুলো বিক্রি করে কোনরকমে দুইজনই জীবনযাপন করতেন। একদিন তার দাদীও মারা গেলেন। এবার রিতু কোথায় যায়! গ্রাম থেকে ৩০
মাইল দূরে শহর। প্রতিবেশিরা তাকে বাবার কাছে পৌঁছাবার কথা বলল। সবাই তাকে স্থানীয় এক প্রবাসীর সঙ্গে শহরে পাঠিয়ে দিল। সেখানে গিয়ে এক অনাথ অাশ্রমে অাশ্রয় নেই সে। সেখানে ছিল খাওয়া-দাওয়ার সুবিধা। রিতু সেখানে খুবই ভালভাবে দিন কাটাতে লাগল। পাশাপাশি পড়াশোনাও করতে লাগল। রিতু ছিল খুবই মেধাবী। পড়াশোনা করে পরীক্ষায় সে ভাল রেজাল্ট করতে লাগল। সেখানকার এক ম্যাডাম তাকে খুব অাদর করতেন। একদম নিজের মেয়ের মত। রিতু প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শেষ করে পা রাখল উচ্চ মাধ্যমিকে। পরে সে ওই ম্যাডামের বাড়িতে থাকতো। ম্যাডামের কোন ছেলে-মেয়ে ছিলনা। তাআ রিতু সর্বক্ষণ ম্যাডামের অাদর-যত্ন, ভালবাসা পেত। সে অাস্তে অাস্তে তার সব অতিত ভুলে গেল। মনে হল সে তার নিজের মাকে খুঁজে পেয়েছে। রিতুর মনে বড় ডাক্তার হওয়ার শখ জাগে। সে ডাক্তার হওয়ার জন্যে অক্লান্ত পরিশ্রম করে। এভাবে সে একদিন বড় ডাক্তার হয়ে গেল। গরীব মানুষদের সে বিনা পয়সায় চিকিৎসা করাত। সে একটা হসপিটাল দিল। সে হসপিটালে বিভিন্ন ডাক্তার কাজ করতো। রিতু মাঝে মাঝে চিন্তা করে অাজ কোথায় তার অতিত! সে একদিন গেল তার ছোটবেলার গ্রামে। যেখানে তার জন্ম হয়েছিল। সেখানে গিয়ে সে একটা ছোট হাসপাতাল খুলল। সেখানে বিনা পয়সা রোগীদের সেবা দিতে লাগল। সে তার কাজের মধ্যে একটা বই লিখল, যেখানে জন্ম হতে তার সব জীবন কাহিনী লিখল। বইয়ের নাম রাখল 'রিতুর স্বপ্ন'
No comments